বাঙালির জীবনযাপনে গুড় যেন এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে গুড় শুধু স্বাদের জন্যই নয়, এর রয়েছে নানা স্বাস্থ্যগুণও। বিশেষ করে আখের গুড় প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি হওয়ায় এটি বেশ স্বাস্থ্যকর। তাই চিনির বিকল্প হিসেবে গুড় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
আজ আমরা জানবো আখের গুড়ের উপকারিতা, অপকারিতা এবং আরও কিছু চমকপ্রদ তথ্য—
আখের গুড়ের উপকারিতা—
শক্তির প্রাকৃতিক উৎস: গুড় ধীরে ধীরে হজম হয়, ফলে শরীরে দীর্ঘস্থায়ী শক্তি দেয়। তাই এটি খেলাধুলা বা পরিশ্রমের পরপর খাওয়ার জন্য আদর্শ।
হজমে সহায়ক— ভোজনের পর এক টুকরো গুড় খেলে হজমে সাহায্য করে। এটি পাকস্থলীতে হজমকারী এনজাইমের নিঃসরণ বাড়ায়।
রক্ত পরিশোধন—গুড় রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং লিভারের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে দেয়।
রক্তশূন্যতায় উপকারী—গুড়ে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে, যা অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা দূর করতে সহায়ক।
সর্দি-কাশি ও শীতজনিত সমস্যা কমায়— শীতকালে গুড় খেলে গলা ব্যথা, ঠান্ডা ও কাশির সমস্যা কমে। গরম দুধে গুড় মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
ত্বকের জন্য ভালো—গুড়ের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং মিনারেলস ত্বকের কোষকে রক্ষা করে, বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে।
হাড়ের গঠনে সাহায্য করে—গুড়ে থাকা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস হাড়কে মজবুত রাখে।
আখের গুড়ের কিছু অপকারিতা—
যদিও এটি চিনির তুলনায় অনেক ভালো, তবে অতিরিক্ত আখের গুড় খাওয়ার কিছু ঝুঁকিও আছে:
রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়— ডায়াবেটিস রোগীরা এটি খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ক্যালরিযুক্ত— গুড়ে ক্যালোরি বেশি, অতিরিক্ত খেলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে।
সংরক্ষণের সময় ছাঁচ বা ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে— দীর্ঘদিন সংরক্ষিত গুড় খাওয়ার সময় সতর্ক থাকুন।
আখের গুড় আমাদের ঐতিহ্য, স্বাস্থ্য ও স্বাদের মিলনস্থল। আধুনিক প্রক্রিয়াজাত চিনি থেকে অনেক বেশি উপকারী এই প্রাকৃতিক বিকল্পটি শুধু স্বাদের জন্য নয়, বরং পুষ্টিগুণের কারণেও আপনার খাদ্যতালিকায় স্থান করে নিতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে- সব ভালো জিনিসও পরিমিত পরিমাণেই ভালো!
Posted ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫
Sangbad Dinrat | Editor & Publisher