রাজধানীজুড়ে যেখানে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে, সেখানে রমজানের শুরু থেকে প্রতি কেজি গরুর মাংস মাত্র ৫৯৫ টাকায় বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিলেন উত্তর শাহজাহানপুরের মাংস ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান।
সরেজমিনে উত্তর শাহজাহানপুর খলিল গোস্ত বিতানে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকে অসংখ্য মানুষ সারি করে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই এসেছেন মাংস কিনতে। তবে মাংস পেতে তাদের কিছুটা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কারণ একের পর এক গরু জবাই হচ্ছে, আর অতি দ্রুত মাংস বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। সবাই কমবেশি দুই থেকে পাঁচ কেজি পর্যন্ত কিনছেন।
জানা গেছে, গরুর মাংসের চড়া মূল্যের মধ্যে কম দামে বিক্রি করে আলোচনায় আসা ব্যবসায়ী খলিল এমন উদ্যোগ গ্রহণ করার কারণে তাকে জীবননাশের হুমকিও দেয়া হয়েছিল। সবকিছু উপেক্ষা করে তিনি নিজের মনোবল চাঙ্গা রেখে কম দামে মাংস বিক্রি করছেন।
গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাজধানীর খিলগাঁওয়ের খলিল গোশত বিতানে ৫৯৫ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
খলিল গোস্ত বিতানের স্বত্বাধিকারী খলিলুর রহমান বলেন, রোজায় মানুষ যাতে গরুর মাংস খেতে পারে, সে জন্য এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে। রমজানে মূল্য ছাড় দেওয়ার পর মাংস কিনতে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে, ফলে বেড়েছে বেচাবিক্রিও। বাজারের তুলনায় কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করেছি। এজন্য ক্রেতাদের ভিড়। একজন ক্রেতা একবারে সর্বোচ্চ ৫ কেজি মাংস কিনতে পারবেন। লাইনে দাঁড়ানো সবাই যেন মাংস নিতে পারেন সেই চেষ্টা করছি।
খলিলের গোস্ত বিতান থেকে কম দামে গরুর মাংস কেনার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন হাসিবুর রেজা। তিনি বলেন, লোকমুখে খলিল গোস্ত বিতানের কথা অনেক শুনেছি। তাই আজ এসেছি গোস্ত কিনতে। আজকেই প্রথম এসেছি। পাঁচ কেজি মাংস নেবো। তাতে অন্তত হাজার খানেক টাকা সেভ হবে।
অন্য দিকে খলিলুর রহমানের দেখাদেখি রাজধানীতে এখন আরও কয়েকজন কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করেছেন তাদের মধ্যে একজন মালিবাগের খোরশেদ। তিনি প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬০০ টাকায় বিক্রি করছে। অল্প দামে মাংস বিক্রি করেও বেশ ভালো লাভ করছেন বলে জানান তিনি।
খোরশেদ বলেন, লাভ না হলে তো আর চলা যায় না। কিন্তু মূল বিষয় হচ্ছে বেচাকেনা বেশি হচ্ছে। আগে যেখানে দুইটা গরু জবাই হতো এখন সেখানে ১০টা জবাই হচ্ছে। সামান্য লাভ হলেও বেচাকেনা যখন বেশি হয় তখন কর্মচারী বা সব খরচ বাদ দিয়ে পোষায়।
উল্লেখ্য, ১৫ মার্চ এক বিজ্ঞপ্তিতে ২৯টি দেশি কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদফতর। এর মধ্যে গরুর মাংসও রয়েছে। গরুর মাংসের পাইকারি দর ৬৩১ দশমিক ৬৯ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে ৬৬৪ দশমিক ৩৯ পয়সায় বিক্রি করতে বলা হয়েছে। তবে কোথাও এই দর কার্যকর হতে দেখা যায়নি।
Posted ৯:১৭ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪
Sangbad Dinrat | Editor & Publisher