বগুড়ার সোনাতলায় পাটের ফলন ভালো হলেও দাম কম হওয়ায় আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষকরা। লোকসানে পড়তে হচ্ছে পাট চাষিদের। কৃষকদের অভিযোগ পাট বিক্রি করে তাদের খরচের দামও উঠছে না।
সোনাতলার কাচারী, পাকুল্লা, হরিখালী ও সৈয়দ আহমেদ কলেজ হাটগুলো ঘুরে দেখা যায় প্রতিমণ পাট ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে । তবে কেউ কেউ অর্থের কারণে ১৮০০-১৯০০ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান পাট চাষি।
উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের পাট চাষি মুকুল হোসেন জানান, ‘বর্তমানে পাট চাষ করে এবার বিঘাপ্রতি প্রায় চার হাজার টাকা করে লস গেছে। খরচই উঠেনি। এরকম হলে পাট চাষ করবো কিভাবে’?
সোনাতলা সদর ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর গ্রামের পাট চাষি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ‘এবার চার বিঘা মাটিতে পাট করেছি। ২২০০ টাকা মণ হলে বিরাট লোকশানে পড়তে হবে। এরকম হলে পরের বছর আর পাট চাষ করবোনা’।
সৈয়দ আহমেদ কলেজে পাট বিক্রি করতে আসা এক কৃষক বলেন, ‘পাটের দাম খুবই পড়ে গিয়েছি। এক মণ পাট এনেছি বিক্রি করতে। ২২০০ টাকা বলছে। এ টাকায় পাট বিক্রি করলে শ্রমিকের খরচই উঠবেনা’।
হাটে পাট বিক্রি করতে আসা একাধিক কৃষক জানায় ৩২০০-৩৫০০ টাকা মন পাট বিক্রি করতে পারলে কৃষকরা লাভবান হবে আর তা না হলে আগামী বছরে পাট চাষীর সংখ্যা অনেক কমে যাবে।
জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মম হক জানান, এ বছর পাটের দাম কুইন্টালপ্রতি পাঁচ হাজার থেকে পাচ হাজার পাঁচশ টাকা। তবে কি কারণে এ বছর দাম কম তা তিনি জানেন না।
সোনাতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘সোনাতলায় এ বছর পাটের আবাদ হয়েছে ১৬৩০ হেক্টর জমিতে যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ হেক্টর বেশি। এ বছর পাটের গড় ফলন বিগা প্রতি ৮-৯ মন যা অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশী। পাটের বাজার দর বর্তমানে কিছুটা কম। পাট কর্তনের শুরুতে প্রতিমন পাট ২৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা থাকলেও বর্তমানে তা ২২০০ টাকা মন। এ অবস্থায় আমার কাছে মনে হয় সোনাতলায় এ বছর পাটের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বাজারে বর্তমানে পাটের সরবরাহ বেশী থাকায় পাটের মূল্য কিছুটা কমেছে। এছাড়াও পাটের বিকল্প পণ্য হিসাবে প্লাস্টিকের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম কমেছে বলে মনে হয়’।
Posted ৬:০৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Sangbad Dinrat | Editor & Publisher