শনিবার ১৬ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

কুড়িগ্রামের নগরাজপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যসহ ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

আনোয়ার হোসেন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি   শুক্রবার, ১১ আগস্ট ২০২৩
159 বার পঠিত
কুড়িগ্রামের নগরাজপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যসহ ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের নগরাজপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন সুজন ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মোত্তালিব সরকারের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এতে এলাকার মধ্যে ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, সভাপতি ও অধ্যক্ষের যোগসাজশে মাদ্রাসা অধিদপ্তরের ডিজির প্রতিনিধি ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার সহযোগী অধ্যাপক মোঃ শাহ্জালাল অর্থের বিনিময়ে গোপনে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়। এবং মোটা অঙ্কের টাকা রফাদফার মাধ্যমে (গত ৫ জুলাই ২০২৩) বুধবার দুপুর ১২টায় মাদ্রাসায় অতি-গোপনে নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয় বলে আদালতে মামলার কপি ও লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিভাবক ও এলাকাবাসীর জানান, উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের নগরাজপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মোত্তালিব সরকারের অবৈধভাবে গোপনে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করাসহ নিয়োগ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে ন্যায় বিচার চেয়ে আদালতে মামলা ও বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন অত্র মাদ্রাসার অভিভাবক নুরুজ্জামান, আব্দুল আউয়াল। কিন্তু তিনি সরকার আদালতের আইন অমান্য করে বিধি বহির্ভুতভাবে নিয়োগ পরীক্ষায় অধ্যক্ষ পদে নিজেই পরীক্ষা দিয়ে অধ্যক্ষ হওয়াসহ দুই কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। তার বিভিন্ন অনিয়মে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এবং শিক্ষার্থীরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয়ে ঝড়ে পড়ছেন।

এদিকে, নগরাজপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান গত ৩০ জুন ২০২১ সালে অবসর গ্রহণ করেন। তারপর থেকে অত্র মাদ্রাসায় সহকারী অধ্যাপক আব্দুল মোত্তালিব সরকার ক্ষমতা খাটিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে প্রতিষ্ঠানে অনিয়মিত অফিস করাসহ ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি করেই চলছে। এতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ঝড়ে পড়ছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অতি-গোপনে নিজের আত্মীয় ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুল মান্নান এর পুত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন সুজন কে সভাপতি করেন। কিন্তু সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন সুজন তার পরিবার নিয়ে দীর্ঘ ১০বছর থেকে ঢাকায় চাকরী করে জীবন অতিবাহিত করে আসছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নগরাজপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মোত্তালিব সরকার সম্প্রতি গোপনে দু’টি পত্রিকায় ৩টি পদে (অধ্যক্ষ, আয়া ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর) নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেন। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়টি গোপন রেখে চাকুরী প্রত্যাশী আয়া পদে হোসনে আরা বেগম ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নজরুল ইসলামের সাথে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মোত্তালিব সরকার ও সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন সুজন চুক্তিভিত্তিক আগাম অর্থ হাতিয়ে নেয় এবং অতি গোপনে (গত ৫ জুলাই ২০২৩) বুধবার অত্র মাদ্রাসায দুপুর ১২টায় গোপন নিয়োগে অধ্যক্ষ আব্দুল মোত্তালিব সরকারসহ তাদের পছন্দের প্রার্থী আয়া পদে হোসনে আরা বেগম ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নজরুল ইসলাম কে নিয়োগ চুড়ান্ত করতে ৯জনের মধ্যে ৬জন প্রক্সি প্রার্থীকে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষা সমাপ্ত করেন। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজির প্রতিনিধি-ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার সহযোগী অধ্যাপক-আইডি নং-০১৩১৫৮ (আল কুরআন বিভাগ)’র মোঃ শাহ্জালাল মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। এবং গোপন নিয়োগের বিষয়টি ফাঁস হলে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ গোপন নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাষ্টার মাইন্ড হিসেবে ওই মাদরাসার সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন সুজন নেপথ্যে ভূমিকা রাখেন।

ভাঙ্গামোড় এলাকার একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষার বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। সভাপতি ও অধ্যক্ষ যোগসাজশ করে অতি গোপনে বিধি বহির্ভুতভাবে নিয়োগ দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ বিষয়ে নগরাজপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মোত্তালিব সরকার নিয়োগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সভাপতির নির্দেশনা মোতাবেক (৫ জুলাই) আমিসহ দুটি পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগ সংক্রান্তে প্রার্থীদের কাছে কিছু খরচ নেয়া হয়েছে। এবং নিয়োগ পরীক্ষা করতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজির প্রতিনিধিকে মোটা অঙ্কের অর্থসহ অনেককে ম্যানেজ করতে হয়েছে।

নগরাজপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন সুজনকে মোবাইল ফোন নাম্বারে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।

মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজির প্রতিনিধি-ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার সহযোগী অধ্যাপক মোঃ শাহ্জালাল’র সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি সংবাদকর্মীর পরিচয় পাওয়া মাত্র ব্যস্ত আছি বলেই ফোন কেটে দেন।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Facebook Comments Box

Posted ৪:২৪ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১১ আগস্ট ২০২৩

Sangbad Dinrat |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  

উপদেষ্টা সম্পাদক
শহিদুল ইসলাম সাগর
চেয়ারম্যান, বিটিইএ

প্রতিষ্ঠাতা ও প্রকাশক
এম.টি.আই স্বপন মাহমুদ

বার্তা, ফিচার ও বিজ্ঞাপন:
+৮৮০ ১৯ ৭০ ৯১ ১৮ ৪৫
ইমেইল: sangbaddinrat@gmail.com

বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল এসোসিয়েশন কর্তৃক নিবন্ধিত।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত।
error: Content is protected !!