বগুড়ার সরকারী সোনাতলা মডেল স্কুল এন্ড কলেজের সদ্য বিদায়ী প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। আর এর সহযোগী হিসেবে বর্তমান প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) জিএম আহসান হাবীবসহ কয়েকজন শিক্ষক কাজ করেছেন বলে জানা যায়।
অভিযোগে জানা যায়, ২০২৩ সালের জানুয়ারী মাসের ৪ তারিখ থেকে আগষ্টের ২৮ তারিখ পর্যন্ত ৮ মাসে বিদ্যালয়ের ব্যাংক একাউন্ট থেকে আনুমানিক ৪০ লক্ষ ১১ হাজার ৯৯৫ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে জানা গেছে। তবে এই উত্তোলিত টাকা কোন খাতে খরচ হয়েছে তার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কোনো কথা বলবো না। যা বলার আপনারা বর্তমান প্রধান শিক্ষকে বলুন’।
এ বিষয়ে বর্তমান প্রধান শিক্ষকের নিকট জানতে চাইলে প্রথমে তিনি অস্বীকার করেন। পরে উত্তোলনকৃত টাকার তথ্য চাওয়া হয় তথ্য অধিকার বিধিমালার তথ্য প্রাপ্তির আবেদন ফরমের মাধ্যমে। আবেদনের কয়েকদিন পরে আবার তথ্য চাইতে গেলে তথ্য দিতে গড়িমসি করেন।
পরে বর্তমান প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, এ সম্পর্কে আমি কোনো তথ্য দিতে পারবোনা।
তবে বেশ কয়েকদিন ধরে দেখা গেছে, অভিযুক্ত সাবেক প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে নিয়মিত যাতায়াত করেন। এমনকি রাতের বেলাও তাদের বিদ্যালয়ের অফিসে পাওয়া যায় এমন কথাও শুনা গেছে।
২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাত ৩টা পর্যন্ত এবং পরের দিন ২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত সাবেক প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমান বিদ্যালয়ে অবস্থান করছিলেন। বর্তমান প্রধান শিক্ষকের (ভারপ্রাপ্ত) সাথে অভিযুক্ত সাবেক প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমানকে দেখার পর তাৎক্ষনিক উক্ত বিদ্যালয়ের সভাপতি সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)কে ফোনে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করলে অভিযুক্ত সাবেক প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমান একটি ব্যাগ হাতে দ্রুত পালিয়ে যায়।
বর্তমান প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) জিএম আহসান হাবিরে কাছে অভিযুক্ত মতিয়ার রহমানের উপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একটি জরুরি কাজে তাকে প্রয়োজন ছিলো তাই ডেকেছি’। তবে কি জরুরি কাজ এ সম্পর্কে বলতে নারাজ তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজমুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে, তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন এবং বলেন আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাবেয়া আসফার সায়মা বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। শুনার পর মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে এ ব্যাপারে জানতে চেয়েছি। তবে তিনি এখনও আমাকে কিছু জানায়নি। জানালে আপনাকে জানাবো’।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ আল-মারুফ বলেন, ‘এখনও এ বিষয়ে অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবো’।
Posted ৬:২২ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Sangbad Dinrat | Editor & Publisher