শহীদ ক্যাডেট একাডেমি সিরাজগঞ্জ শাখার ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে কাঠের বাটাম দিয়ে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগে পরিচালকসহ দুই শিক্ষকের নামে মামলা দায়ের করেছে শিক্ষার্থীর বাবা।
বৃহস্পতিবার আহত শিক্ষার্থী এস এম ফারহান সাদিক ফাহিম (১২) এর বাবা মো. সোহেল রানা বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানা আমলী আদালতে এই মামলাটি করেছেন।
মামলার আসামিরা হলো, শহীদ ক্যাডেট একাডেমী সিরাজগঞ্জ শাখার সহকারী শিক্ষক মো. বুলবুল (৪২) ও পরিচালক মো. হাসানুজ্জামান রঞ্জু (৬০)।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নিখিল চন্দ্র ঘোষ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাসেল মাহমুদ মামলাটি আমলে নিয়ে সদর থানাকে এফআইআর হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলা সুত্রে জানা যায়, প্রায় ৭ মাস ধরে তার ছেলে এস এম ফারহান সাদিক ফাহিম শহীদ ক্যাডেট অ্যাকাডেমির আবাসিকে থেকে ক্যাডেট ব্যাচের ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। আবাসিকে থাকা শিক্ষার্থীদের দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করেন সহকারী শিক্ষক বুলবুল। তিনি নানা কারণেই শিক্ষার্থীদের গালিগালাজ ও বেধরক মারপিট করেন বলে অভিযোগও রয়েছে।
গত ১৭ জুলাই ফাহিম অসুস্থ বোধ করায় সঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠতে পারেনি। এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক বুলবুল ঘুমন্ত শিশু ফাহিমকে এলোপাতাড়ি কাঠের বাটাম দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। বিষয়টি গোপন রাখার জন্য শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। পরদিন শুক্রবার (১৮ জুলাই) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে শিশুটির মা ও বাবা তাকে দেখতে শহীদ ক্যাডেট অ্যাকাডেমির আবাসিক ভবনে গেলে সহপাঠীরা বিষয়টি তাদের অবগত করেন। এ সময় ফাহিমের প্যান্ট খুলে পশ্চাৎ দেশে বেত ও কাঠের বাটামের আঘাতে জখম হওয়ার চিহ্ন দেখতে পান। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় শহীদ ক্যাডেটের পরিচালক হাসানুজ্জামান রঞ্জুর কাছে বিচার দাবি করলে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উপরন্তু ফাহিমের বাবাকে হুমকি দেন এবং তাকে অফিস থেকে বের করে দেন। এ বিষয়ে সদর থানায় অভিযোগ করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় নাই বলে মামলায় বাদী উল্লেখ করেন।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মো. বুলবুল বলেন, ক্যাডেট অ্যাকাডেমির আবাসিকে বিভিন্ন সময় দুষ্টুমি বেশী করায় একটু মারপিট করে শাসন করা হয়েছে। এছাড়া আর কিছু না।
শহীদ ক্যাডেট অ্যাকাডেমির পরিচালক হাসানুজ্জামান রঞ্জু বলেন, ছেলেটাকে একটু বেশিই মারপিট করা করেছে। তবে তার অভিভাবকরা আমার কাছে আসে নাই। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর তাকে বার বার ফোন দিলেও সে আসেনি। মামলা বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং ঐ শিক্ষার্থীর বাবা মোঃ সোহেল রানার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা দায়ের করবো বলে তিনি জানান।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোকলেছুর রহমান বলেন, আদালতের কোন নির্দেনশা এখনো পায়নি। পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Posted ৭:২৩ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
Sangbad Dinrat | Editor & Publisher