পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ১০নং হলতা গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাব অফিসের নামে টিয়ারখালী বাজারে জমিসহ একটি একতলা ভবন দখলের পায়তারা চালানোর অভিযোগ ওঠছে মহিউদ্দিন আহমেদ ফারুকের বিরুদ্ধে। মহিউদ্দিন আহমেদ ফারুক ওই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ডাঃ রুস্তুম আলী ফরাজী আত্মীয় (শ্যালক)। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টায় প্রেসক্লাবের সভাকক্ষে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লক্ষনা গ্রামের আনোয়ার হোসেন মঞ্জু জমাদ্দারের মেয়ে নিপা আক্তার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দক্ষিণ হলতা মৌজার ৮২৩ নং খতিয়ানের ৬৯৪ নং দাগে থাকা আমাদের নির্মিত একটি ভবন বিবাদীরা দখলের চেষ্টা করলে আমরা আদালতে মামলা করি (যার নং ১২৩৫ তারিখ- ১৬/০৭/২০০৭ ইং)। ওই মামলায় আমরা আদালত থেকে রায় পাই। সম্যক জমি পরিমাপ করে আদালতের প্রসেস সার্ভেয়ারের মাধ্যমে আমাদেরকে বুঝিয়ে দেয় এবং আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোগদখল করে আসছি। এরপর প্রতিপক্ষ মহিউদ্দিন আহমেদ ফারুক, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলম ঝনো ওই ভবনের একটি কক্ষ শালিস ব্যবস্থার জন্য ব্যবহার করতে চায়। আমার দাদা জনস্বার্থে একটি কক্ষ ব্যবহারের অনুমতি দেয়। কয়েক বছর ওই কক্ষটি ব্যবহার করে একপর্যায়ে আমাদের না জানিয়ে পুরো ভবনটিতে মেরামতের কাজ শুরু করে। এতে আমাদের সন্দেহ হয়। এরপর তাদেরকে ওই কক্ষটি ব্যবহারে বাধা প্রদান করলে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের পুরো ভবনটি দখলের পায়তারা চালায়। কয়েক বছর ধরে এ নিয়ে হামলা ও মামলা মোকদ্দমার সৃষ্টি হয়। বিরোধ চরম পর্যায়ে পৌছালে ১ জুন’২০২২ মাসে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমান সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে উভয় পক্ষের সম্মতিতে সুষ্ঠু সুরাহার লক্ষে কোন পক্ষই ওই ভবন ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত অমান্য করে গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় প্রতিপক্ষ মহিউদ্দিন ফারুক ও তাদের লোকজন আমাদের ওই ভবনের তালা ভেঙে দখলের চেষ্টা চালায়। এ সময় আমরা বাধা দিলে তারা আমাদের বিভিন্ন ভাষায় গালাগালি ও হুমকি দিয়ে চলে যায়। আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিষয়টি অবগত হয়েছেন।
ভুক্তভোগী পরিবারটি জানান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক সাহেব স্থানীর সংসদ সদস্যের নিকটাত্মীয় হওয়ায় আমরা ভয় ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে পুলিশ প্রশাসনসহ স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিডি) হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ১৯৬১ সালে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান বাহার আলী হাওলাদার ওই ভবনের একটি কক্ষ ইউনিয়ন পরিষদের সাব অফিস হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। স্বাধীনতার পরবর্তী আমি ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর ওই ভবনে ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলাম।
তিনি আরও বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নামে ৩৩ শতক জমি ইউনিয়ন পরিষদের নামে ক্রয় করা হয়েছিল এবং সেই জমিতেই ওই ভবন নির্মিত। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। আনোয়ার জমাদ্দার গং আদালত থেকে যে রায় পেয়েছে তা একতরফা রায়। বৃহস্পতিবার আমরা তালাবদ্ধ ওই অফিসটির তালা খুলতে চেয়েছিলাম। এসিল্যান্ড এবং ইন্সপেক্টর তদন্ত এসেছিল। যদিও বিশেষ কারনে তালা খোলা হয়নি।
Posted ৫:০৩ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Sangbad Dinrat | Editor & Publisher