আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রংপুরে আর মঙ্গা আসেনি। নৌকায় ভোট দিলে উন্নয়ন হয়, সেটা প্রমাণ করেছি। কৃষকের আর সারের জন্য আন্দোলন করতে হয় না। অথচ খালেদা জিয়া সারের জন্য কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছিল।
আজ বুধবার রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
রংপুরবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন, আজ কতগুলো প্রকল্প উদ্বোধন করলাম। এ অঞ্চলের প্রত্যেকটা জিনিসের যাতে উন্নয়ন তরান্বিত হয়, সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। এর আগে এতগুলো প্রকল্প একসঙ্গে কেউ করে দিয়েছে কিনা জানি না।
তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের রংপুর পল্লী উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছি। ১০০ শয্যার রংপুর শিশু হাসপাতাল ও পুলিশ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্প এবং দেশের উত্তরাঞ্চলে শিল্পায়নে নতুন মাত্রা যোগ হবে, সেটাও আমরা করে দিচ্ছি। কারণ গ্যাসের দাবি আপনাদের বহুদিনের।’
তিনি আরও বলেন, আসামের নুমালীগড় থেকে পাইপ লাইনে ডিজেল এনে সৈয়দপুরে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর ব্যবস্থা করেছি। এখানে কোনোদিন তেলের অভাব হবে না, ডিজেলের অভাব হবে না, সেই ব্যবস্থাও আমরা করে দিয়েছি। সৈয়দপুরে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যায় আওয়ামী লীগ সরকার করে দিয়েছে। লালমনিরহাটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড এয়ার স্পেস বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি। সেখানে গবেষণা হবে। একদিন আমাদের দেশের মানুষ চাঁদেও যেতে পারবে, প্লেন বানাবে-এ ধরনের শিক্ষা সেখানে দেওয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, সৈয়দপুর বিমানবন্দর অবহেলিত ছিল, সেটা আমরা উন্নয়ন করে দিচ্ছি। এটা আঞ্চলিক বিমাবন্দর। এটা যাতে নেপাল, ভুটান মালদ্বীপ ও ভারত ব্যবহার করতে পারবে সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি। এসব দেশের সঙ্গে যাতে বাণিজ্য বিস্তার হয় তার ব্যবস্থাও আমরা নিচ্ছি।
আজ সমাবেশের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী রংপুর জেলার ২৭টি বাস্তবায়িত উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিক্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
সমাবেশে প্রধান বক্তা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তিস্তার পানি পাবেন। যার নেতৃত্বে গঙ্গার পানি পেয়েছেন, তার নেতৃত্বেই তিস্তার পানিও পাবেন। ধৈর্য ধরেন। আওয়ামী লীগ পালিয়ে যাবে না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ইঙ্গিত করে সেতুমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার ক্ষমতা মানে বাংলাদেশের জনতার ক্ষমতা। আমরা (আওয়ামী লীগ) পালাব না। পালিয়েছে বিএনপির নেতা। কবে আসবে কেউ জানে না। এলে তো জেলে থাকতে হবে। রাজপথে খেলা হবে। রাজপথেই ফয়সালা হবে। ডিসেম্বরে ফাইনাল খেলা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৯৭৫ সালের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে অর্জন শেখ হাসিনা। আর গত ১৫ বছরে এই জাতি যা অর্জন করেছে, তার সবই শেখ হাসিনা দিয়েছেন। এই অর্জনকে কোনোভাবেই নষ্ট করতে দেওয়া যাবে না। সারা বিশ্বের জন্য তিনি একমাত্র আমাদের বড় অর্জন।
এর আগে মহাসমাবেশে বক্তব্য দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।
মহানগর আওয়ামী লীগের আহবায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মহানগরের যুগ্ম আহবায়ক আবুল কাশেম ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক মাজেদ আলী বাবুল অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
Posted ৭:২৬ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০২ আগস্ট ২০২৩
Sangbad Dinrat | Editor & Publisher