শনিবার ১৬ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

দুবাইতে এশিয়া আরব এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন প্রখ্যাত সমাজকর্মী মোশাররফ

আলি আহসান বাপি   মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ ২০২৫
97 বার পঠিত
দুবাইতে এশিয়া আরব এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন প্রখ্যাত সমাজকর্মী মোশাররফ

মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য—এই কথাটিকে তিনি সারাটা জীবন মন্ত্রগুপ্তির মত মেনে চলেন। শৈশব, কৈশোর কেটেছে নিদারুণ কষ্টে। দিনমজুর জয়নাল আবেদিনের সন্তান মোসাররাফ হোসেন অভাবের তাড়নায় ওষুধের দোকানে কাজ করেছেন। পরবর্তীতে গ্রামীণ চিকিৎসক হিসেবেও জীবিকা নির্বাহ করেছেন। তিনি বরাবরই পরিশ্রমী ছিলেন। ছিলেন পরোপকারীও। তিনি স্বপ্ন দেখতেন। স্বপ্ন দেখতেন জীবনের শেষ দিন অবধিও মানুষের পাশে থাকবো। মানুষের সেবা করবো।

মোসাররফ হোসেন। মুর্শিদাবাদের শিল্পনগরী ফারাক্কার অর্জুনপুরে ১৯৬৩ সালের এক শীতের ভোরে তাঁর জন্ম। সেখানেই তাঁর বেড়ে উঠা। পড়াশোনা স্থানীয় খোদাবন্ধপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে অর্জুনপুর হাইস্কুল ও ধুলিয়ানের ঐতিহ্যবাহী কাঞ্চনতলা জেডিজে ইনস্টিটিউশনে। তারপর অরঙ্গাবাদ ডিএন কলেজ থেকে স্নাতক। পরবর্তীতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর।

একজন দিনমজুর পরিবারের সন্তান হিসেবে জন্ম নিয়ে তাঁর নিজ প্রচেষ্টায় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পর তিনি সমবায় আন্দোলনের একজন অগ্রণী মানুষ হিসেবে রাজ্যজুড়ে পরিচিতি পান। ১৯৮৬ সালে স্থানীয় খোদাবন্দপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে ম্যানেজার হিসেবে নিযুক্ত হন। অল্প দিনের মধ্যেই তাঁর প্রচেষ্টায় খোদাবন্ধপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি আমানত সংগ্রহ শুরু করে। মোসাররফ হোসেনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় খোদাবন্দপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি আজ গোটা মুর্শিদাবাদের মধ্যে অন্যতম সেরা সমবায় সমিতি হিসাবে পুরস্কৃত হয়েছে। তিনি একজন সমবায়ী ও সমাজকর্মী হিসেবে বহু পুরস্কারও ইতিমধ্যে পেয়েছেন। সমবায় আন্দোলন ও সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি পরপর দুইবার বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন। পাশাপাশি বলিউডের প্রখ্যাত অভিনেতা রাকেশ শর্মা, টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা শংকর রায় চৌধুরী ও অঙ্কুশদের মতো অভিনেতারাও তুলে দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের হাতে পুরস্কার। সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন সার্ক জার্নালিস্ট ফোরামের তরফেও মোশাররফ হোসেনকে সম্মাননা জানানো হয়েছে।

সমবায় আন্দোলনের এই অগ্রণী যোদ্ধাকে জেলার ঐতিহ্যবাহী সংস্থা মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট হোলসেল কনজিউমারস কো-অপারেটিভ সোসাইটির ডিরেক্টর পদে নিযুক্ত করা হয়েছে। একসময় তিনি মুর্শিদাবাদ জেলা সমবায় কর্মচারী ফেডারেশনের জেলা সহ সভাপতি হিসেবেও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব সামলেছেন। অর্জুনপুর হাইস্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন। টানা ছয় বছর তিনি দক্ষতার সাথে স্কুলের উন্নয়নে কাজ করেছেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি অরঙ্গাবাদ ডিএন কলেজের গভর্নিং বডি মেম্বারও নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি বর্তমানে সার্ক জার্নালিস্ট ফোরামের ওয়েস্ট বেঙ্গল চ্যাপ্টারের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যও। মোসাররাফ হোসেনের প্রচেষ্টায় গ্রামীন পিছিয়ে পড়া মহিলাদের স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে গড়ে উঠেছে মুর্শিদাবাদের অগ্রণী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মুর্শিদাবাদ নারী উন্নয়ন সমিতি।

মোসাররাফ হোসেন স্পষ্টবাক মানুষ। সহজ, সরল, ঋজু। ভীষণ মানবিক ও দরাজ দিলের। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, যতদিন বাঁচবো পিছিয়ে পড়া গ্রামীণ মহিলাদের স্বাবলম্বী করার জন্য কাজ করবো। পাশাপাশি সমবায় আন্দোলনকে আরো জোরদার করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবো।

নানাবিধ জনকল্যাণমূলক কাজকর্মের জন্য তিনি দেশ-বিদেশের বহু পুরস্কার ও সংবর্ধনা পেয়েছেন। মোশাররফ হোসেনের এহেন মানবিক কাজে আপ্লুত হয়ে এবার ফ্রান্সের একটি বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ তাঁকে সাম্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রী তুলে দেবেন আগামী ১১ই মে। দুবাই এর একটি পাঁচতারা হোটেলে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এশিয়া আরব এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড এন্ড সামীট-২০২৫। সেখানে দেশ-বিদেশের বহু গুণী মানুষ উপস্থিত থাকবেন। সেখানেই হাজারো গুণী ও কৃতী মানুষদের সামনেই মোশাররফ হোসেনের হাতে তুলে দেওয়া হবে এশিয়া আরব এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ও সাম্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রী।

এবার খোদ দুবাইয়ের মাটিতে পাঁচতারা হোটেলের বলরুমে মোসাররাফ হোসেনের সমবায় অন্দোলনের কথা, পিছিয়ে পড়া গ্রামীণ মহিলাদের স্বনির্ভর করার গল্প শুনবে গোটা পৃথিবী।

এই মহার্ঘ্য সম্মাননা প্রাপ্তির কথা শুনে কি বললেন মোশারফ হোসেন? শুনুন তাঁর কথা। তিনি আমাদের প্রতিবেদককে জানান, প্রান্তিক মানুষদের, বিশেষ করে আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া গ্রামীণ মহিলাদের স্বনির্ভর করার জন্য ও সমবায় কে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য আজ আমার এই মহার্ঘ্য সম্মাননা প্রাপ্তি । আমি ভীষণ খুশি। আমার খুব ভালো লাগছে।আমার সমাজ সেবামূলক কাজকর্ম আগামীতে আরও বৃহৎ আকারে হবে। মোসাররাফ হোসেন বলেন, জীবনের সবচেয়ে বড় সুখ হচ্ছে, গরীব-দুঃখী,অসহায় – আর্ত মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। যতদিন বাঁচবো ততদিন গরিব ও অসহায় মানুষের সেবা করে যাবো।

Facebook Comments Box

Posted ৭:০৫ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ ২০২৫

Sangbad Dinrat |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  

উপদেষ্টা সম্পাদক
শহিদুল ইসলাম সাগর
চেয়ারম্যান, বিটিইএ

প্রতিষ্ঠাতা ও প্রকাশক
এম.টি.আই স্বপন মাহমুদ

বার্তা, ফিচার ও বিজ্ঞাপন:
+৮৮০ ১৯ ৭০ ৯১ ১৮ ৪৫
ইমেইল: sangbaddinrat@gmail.com

বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল এসোসিয়েশন কর্তৃক নিবন্ধিত।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত।
error: Content is protected !!